Monday, April 10, 2017

অনেক মানুষের ভিড়ে আমি একা: মিথিলা

ঢাকার অদূরে আইইউবিএটি ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়াতে হেমন্তের সন্ধ্যাগুলোতে চলে আলোর নাচন। গাঢ় নীল আকাশ আর মনোরম আলো দিয়ে যাকে ভিন্নভাবে চেনা যায়। তেমনি প্রকৃতির ভিন্ন এক আবহে এ ক্যাম্পাসে নিজেকে যে কেউই খুঁজে নিতে পারেন! আর সেখানেই চলছিল জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা অভিনীত একটি নাটকের শুটিং। সেদিন সন্ধ্যায় প্রিয়.কমের প্রিয় কথা বিভাগে কথা হলো মিথিলার।
মিথিলাকে বলা হলো- পাঁচটি বিষয় বেছে নেওয়ার জন্যে, যা তার জীবনকে সব সময়ই নতুন করে রাঙিয়ে তোলে। তিনি বললেন, ঝুম বৃষ্টি দেখা, রিকশায় করে ঘুরে বেড়ানো্, রাস্তার পাশে টং দোকানে চা খাওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া আর মেয়ের সঙ্গে সময় কাটানো। কিন্তু মিথিলা কেন বেছে নিলেন এমন বিষয়গুলো? মিথিলা জানালেন, তিনি নিজের মতো করে ঢাকাকে আবিষ্কার করে নিয়েছেন! যেখানে ভাপা পিঠা, রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়াটাই যথেষ্ট। যেগুলোকে ছেড়ে যাওয়া তার জন্য অসম্ভব!
 মিথিলা নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি ব্র্যাকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার অব এডুকেশন হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।

মিথিলা: যখন আমি অফিস শেষে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাই, তখন তো অনেকগুলো মানুষের ভিড়ে আমি একা। আমার পরিচিত আশেপাশে কেউ নেই। সবাই যে যার গন্তব্যে ছুটে চলছে। ওই বিষয়টা খুবই মজার। ভাবি, এ শহরটা আমার কত আপন! অথচ এখন কাউকেই চিনছি না। তখন নিজেকেই একটু ভিন্নভাবে আবিষ্কার করি।
প্রিয়.কম: আর আপনাকে যদি বলা হয় ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে, তাহলে আপনি এ শহরের কোন জায়গাটাকে সবচেয়ে বেশি মিস করবেন?
মিথিলা: অবশ্যই আমার বাসা।
প্রিয়.কম: আচ্ছা, ঢাকার কোন জায়গাটা আপনার সবচেয়ে প্রিয়?
মিথিলা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। সেখানে আমার জীবনের দুর্দান্ত একটা সময় কেটেছে।

প্রিয়.কম: কখনও যদি এমনটা হয়, শহরের বাইরে থেকে আপনার পরিচিত কিংবা অপরিচিত কেউ ঢাকায় প্রথম এলো। তাকে কীভাবে আপ্যায়ন করবেন আপনি? 
মিথিলা: নিশ্চয়ই তাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গাগুলো ঘুরিয়ে দেখাবো। প্রাচীন বিভিন্ন স্থাপনাগুলোর ইতিহাস আর ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাব।
প্রিয়.কম: শীতের ঢাকায় আপনার কাছে প্রধান আকর্ষণ কি?
মিথিলা: ভাপা পিঠা।
প্রিয়.কম: শহরের কোন বিষয়টা বদলে দিতে চাইবেন?
মিথিলা: অবশ্যই, ট্রাফিক জ্যাম।
প্রিয়.কম: এ শহরের তো একেক সময় একেক রূপ দেখা গেছে ৭০, ৮০, ৯০ কিংবা একবিংশ দশকে। তবে কোন দশকটা আপনার সবচেয়ে বেশি পছন্দ?
মিথিলা: আমি যে সময়টা বড় হয়েছি মানে ৯০ এর দশকে। যখন এতো ট্রাফিক জ্যাম ছিল না। হেঁটে হেঁটে স্কুল কিংবা কলেজে যেতাম। সে সময়গুলো আসলেই অনেক ভালো ছিল।
প্রিয়.কম: আপনার মতে, ঢাকার ইউনিক বিষয় কি?
মিথিলা: ঢাকার মানুষগুলো অনেকে বেশি কর্মশীল আর ইতিবাচক ধ্যান ধারণা পোষণ করে পথ চলেন। যা আসলেই পৃথিবীর অন্য শহরে খুব এমনটা দেখা যায় না। 

প্রিয়.কম: ঢাকা নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা?
মিথিলা: আমরা যারা এ দেশের নাগরিক, সবারই মনে হয় প্রাণের শহরটাকে নিয়ে কম-বেশি পরিকল্পনা আছে। তবে আমি বলব কীভাবে ঢাকার ট্রাফিক জ্যামটা কমানো যায়, সে বিষয়ে আমি প্রথমে পরিকল্পনা করতাম।
প্রিয়.কম: আপনার মন খারাপ হলে কিংবা সুযোগ পেলে আপনি এ শহরের কোথায় গিয়ে বসবেন?
মিথিলা: ভেবে দেখতে হবে (একটু ভেবে বললেন) কোন ক্যাফেতে। কারণ সেখানে নিজের মতো করে একা আড্ডা দেওয়া যায়। একা ওয়াইফাই জোনে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে নিজের মতো করে সময় কাটানো যায়। আমি মনে করি এটা নগরায়নের একটা অংশ। যা জীবনযাত্রার গতিপথ অনেকটাই বদলে দিয়েছে।
প্রিয়.কম: প্রিয়.কমকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মিথিলা: প্রিয়কেও ধন্যবাদ।
সম্পাদনা: গোরা

No comments:

Post a Comment